বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১০

শুভ জন্মদিনে

কিছু কথা, আমার জন্ম স্হানটির সম্পর্কে সামান্য একটু ধারনা দিচ্ছি- আমাদের গ্রামের বাড়িটি বেশ বড়। নানা রকম ফলের গাছের মধ্যে- উঠোনের কোণে পেঁয়ারা গাছটিতে বার মাস পেঁয়ারা ধরতো আমি সে গাছে চড়ে পেঁয়ারা খেতাম। খেঁজুরের রস, খেঁজুর থাকতো গাছে।সে গাছের ডালে ডালে বাঁবুই পাখির বাসা।আমার ঘুম ভাঙ্গতো - সে পাখির কিঁচিরমিচির আওয়াজে
বাড়ির লাগোয়া পুকুর।সান বাঁধানো ঘাট।
বড় সাইজের কচুরি/পানায় ভরা থাকতো বলে ,শীতের সময় খুব ঠান্ডা থাকতো পুকুরের পানি।হিম শীতল সে পানি ,ঠান্ডায় গা পুড়ে যেতো বলে,পুকুরের নাম- গা-জ্বালা। পুকুরের পাড়ে হিজল গাছের সারি।
বর্ষায় হিজল ফুলগুলো বাতাসে দোল খেতো আর ঝরে পড়তো পানিতে থোকা থোকা/ সারি সারি - ঢেউ এসে ভাসিয়ে নিত ,তারই বুকে।
আমার ছোট্টবেলা,প্রিয় সে বেলা।
আমি এখনও ছুটে যাই সেখানে কিন্তু খুঁজে পাইনা,তাকে।এখন আর আপন মনে হয়না।কেমন যেন অচেনা সব।সব কিছুরই পরিবর্তন এসেছে -সেই ঘর,বাড়ি /গাছপালা ,পথঘাট সবই। কিছুই নেই আগের মতো।  আছে কেবল সেই গা-জ্বালা পুকুরটি, একই রুপে একই গন্ধে। আমি ছুটে যাই সেখানে,অন্জলি ভরে তুলে নেই তার পানি , গা ভেজাই ,গন্ধ নেই তার ,আমার ছোট্ট বেলার
শুভ জন্মদিনে
শাহনাজ পারভীন
অগ্রহায়নের এমন একটি দিনে
এক কিশোরী বধুর লাজুক নয়নে
এক চল্লিশ বছর আগে
শিশির ভেজা ঘাসের ডগায়
সোনালী রৌদ্রের বর্ণীল ছটায়
বার্তা এসেছিল,তুমি আসছো ।।


উঠোনের কোণের পেয়ারা গাছটির
পল্লবিত ডগা থেকে
হঠা কিচির মিচির কাকলী তুলে
একঝাক বাঁবুই উড়ে গিয়ে বসেছিল, কাছেই খেঁজুর গাছের ডালে ওদের বাসায় ওরাও জানতে পেরেছিল , তুমি আসছো
বাড়ীর নিকোনো উঠোন পেরিয়ে
একবাক নেমে গা-জ্বালা শীতের পুকুরের
ওপর নুঁয়ে পরা হিজলের ডালে বসা মাছরাঙাটি
রৌদ্রাভায় জলের নীচের চকচকে পুঁটি থেকে  দৃষ্টি তার সরিয়ে নিয়েছিল নীল আকাশের সীমানায়, সে জানতে পেরেছিল, তুমি আসছো


তুমি এলে ,চোখ মেলে তাকালে  মায়ের মমতায় ,বাবার আদরে অভিসিক্ত হয়ে
সোনালী রোদ্দুর ,মাছরাঙা-বাঁবুই, চাচা,মামা,খালা,ফুপু
সবাই ছিল কাছে কিংবা ডাকলেই সারা এমন দুরে, সবাই জেনেছিলো- তুমি এসেছো
শুভ জন্মদিন তোমাকে , এমন দিনটি আসুক ফিরে ফিরে
সুখের পরশ নিয়ে ,শত ৎসর পূর্ণ করে
তোমার হিরন্ময় ছোয়ায় আলোকিত হোক
আমাদের পৃথিবী , জানবো তুমি আমাদের ভালোবেসেছো ।।
ঢাকা,০৫ ডিসেম্বর ২০০৯

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন